ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো পারাপার,প্রতিশ্রুতিতেও মিলেনি সেতু

রাঙ্গামাটি

॥ বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি ॥

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলাধিন বঙ্গলতলী ইউনিয়নের করেঙ্গাতলী বাজার এলাকায় কাচালং নদী পারাপারে একটি সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগে ভুঁগছে এলাকাবাসী। উপজেলার একটি বৃহৎ ইউনিয়ন ৩৫ নং বঙ্গলতলী, ওখানে প্রায় ৩০ হাজার লোকের বসবাস রয়েছে।

করেঙ্গাতলী বাজার এলাকায় কাচালং নদী পারাপারে একটি সেতুর দাবী করে আসছে দীর্ঘবছর ধরে বঙ্গলতলীবাসী। সুকনো মৌসমে নদীর উপর কাঠের সেঁতু স্থানিয়রা নির্মান করে পারাপারের জন্য বর্ষা এলে কাঠের সেঁতুটি প্রতি বছর বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। ওই নদী পারাপারে  ভোগান্তির ছেয়ে দুর্চিন্তার কারণ অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা।

স্থানীয় সমরেশ চাকমা বলেন,নদী পারাপার হয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইউনিয়নের একমাত্র মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষা অর্জনের  প্রয়োজনে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে নদীতে নৌ পারাপার হতে হয়। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনার যেন শেষ নেই বিষয়টি বড়ই মানবেতর।

বিদ্যালয়ে শিক্ষা অর্জনে যাওয়া  ছাত্রছাত্রীদের নদী পারাপারে  অভিভাবাকদের মাঝে চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠা বিরাজ করে বলে জানা গেছে।এছাড়াও তিনি আরো বলেন, ১৮ সালের জাতিয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান রাঙ্গামাটির  স্থানীয় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল সেঁতুটি নির্মান করে দেওয়ার।

আমরা সকলে আশাবাদি ছিলাম সেঁতুটি নির্মানের ফলে স্কুল, কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী সহ ইউনিয়নবাসী দুর্ভোগ যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পাবো। প্রতিশ্রুতির  তিন বছর অতিক্রম হলেও বাস্তবে এখনো দুর্ভোগে রয়েছি। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।

জানা যায়, মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যায়ন  শেষে শিক্ষার্থীদের যেতে হয় উপজেলা সদরের একমাত্র উচ্চ বিদ্যাপীঠ কাচালং সরকারী ডিগ্রী কলেজে । বঙ্গলতলী ইউনিয়ন থেকে  উপজেলা সদর প্রায় ১৮/২০ কিলোমিটার দুরত্ত্ব হওয়ায় এবং  উন্নত সড়ক ব্যবস্থা না থাকায়,একমাত্র বাহন মোটরসাইকেল  যাতায়াত করতে হয় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের।  যথাসময়ে কলেজ পৌঁছতে শিক্ষার্থীদের সময়ের ২ঘন্টা পূর্বে ঘর থেকে বেড় হতে হয়।

বিষেশ করে বর্ষা মৌসমে নদী পারাপারে চরম ভোগান্তি ও ঝুঁকির শিকার হতে হয় শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনসাধারণের। বর্ষা মৌসমে নদীর পানি বেড়ে গিয়ে প্রবাহমান স্রোতধারা পরিবর্তন হয়ে প্রবল গতিতে নদীর পানি প্রবাহিত হতে থাকায় ঝুঁকি নিয়ে নৌ পারাপারে অনেকে দূর্ঘটনার শিকার হয়ে আহত ও মৃত্যু বরণ করেছে বলে জানান স্থানীয় ভুক্তভোগিরা। এব্যাপারে বঙ্গলতলী ইউপি চেয়ারম্যান জ্ঞানজ্যোতি চাকমা বলেন,কাচালং নদী পারাপারে স্থানীয় জনসাধারনকে প্রতিনিয়িত চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।  নদীর উপর সেঁতুটি নির্মাণ হলে উপজেলার  সাথে ৮টি ইউনিয়নে সড়ক যোগাযোগের নতুন দ্বার উম্মেচিত হবে এবং অত্র ইউনিয়নের উন্নয়নে সেঁতুটি যতেষ্ট গুরুত্তপূর্ণ ভুমিঁকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এব্যাপারে বঙ্গলতলী ইউপি আওয়ামীলীগ সভাপতি নুরুল ইসলাম স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা ও সংসদ সদস্য দিপংকর তালুকদারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কথা শিকার করে বলেন,  সেঁতু নির্মানের কাজ প্রক্রিয়াধীন আগামি অর্থ বছরে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাওয়ার কথা রয়েছে।

এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, বঙ্গলতলী নদীতে সেঁতু নির্মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয়দের দুর্ভোগ ও স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের নদী পারাপারে  অনেকে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার কথা শুনেছি। ওই নদীতে সেঁতু নির্মানের  প্রকপ্ল প্রস্তুত করে প্রস্তাবনা পাঠিয়ে দিয়েছি।