\ নিজস্ব প্রতিবেদক \
ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হওযার আলোর মুখ দেখছেন বালুখালী ইউনিয়ন পরিষদের কান্দ্যামুখ এলাকার বিরজু মনি চাকমা। রাঙ্গামাটি জেলা মৎস্য বিভাগের পার্বত্য অঞ্চলের মৎস্য সম্পন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের নিবন্ধিত জেলেদের হওয়ায় মৎস্য বিভাগ তাকে ৬ টি ছাগল দেন মৎস বিভাগ। গত এক বছরে বিজু মনি চাকমার ছাগলের সংখ্যা হচ্ছে ১১ টি। আগামী কিছু দিনের মধ্যে আরো ৪ টি ছাগল বাচ্চা দেবে বলে জানান বিজু চাকমা। তার এই সাফল্য দেখে স্থানীয় অনেকেই তাকে অনুসরণ করছে বলে জানান স্থানীয়রা।
রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার বালুখালী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ক্যানইন্দামুখ্য এলাকার বিজু মনি চাকমা বলেন, রাঙ্গামাটি জেলার নিবন্ধিত জেলে হওয়ায় মৎস্য বিভাগ থেকে ৬ টি ছাগল পায়। ছাগল গুলোকে আমার সন্তানের মতো করে লালন পালন করেছি। বর্তমানে আমার ১১ টি ছাগল হয়েছে। আগামী কিছু দিনের মধ্যে আরো ৪ টি ছাগল বাচ্চা দেবে। এই ছাগল গুলো থেকে আগামী কিছু দিনের মধ্যে ৩ টি ছাগল আগামী মাছ শিকার বন্ধ কালীন সময়ে বিক্রি করে সংসার ও ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে পারবো।
এছাড়া ছাগলের সংখ্যা যদি আরো বৃদ্ধি পায় তাহলে আগামী বছর একটি গরুর বাছুর কিনবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি মৎস্য বিভাগকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বালুখালী ইউনিয়নে আমরা খুবই গরীব জেলে। আমাদের কথা চিন্তা করে মৎস্য বিভাগ আমাদেরকে স্বাবলম্বী করে তুলতে এবং কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার বন্ধকালীণ সময়ে যাতে মাছ শিকার না করি তার জন্য ছাগল দিয়েছে। এই ছাগল দিয়ে আজ আমি আলোর মুখ দেখছি। আশা করছি এই ছাগল থেকে আমার একটি ছাগলের খামার হবে। পাশাপাশি আমি গরুও কিনবো। এছাড়া ছাগল বিক্রি করে কিছু মুরগীও কিনে লালন পালন করবো। এই দিয়ে আমার ছেলে মেয়েদেরকেও আমি লেখপড়া শিখিয়ে মানুষ করতে পারবো। মাছ শিকার করে ছেলে মেয়েদের মাছ ভাত ও দুধ ডিমের অভাব পুরণ করতো পারবো। এতে করে আমার পরিবার আর্থিক স্বচ্ছলতা বাড়াতে সক্ষম হবো আমি।
সম্প্রতি বিজু মনি চাকমার সাফলতা দেখতে সরজমিনে পরিদর্শন করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের উপ প্রকল্প পরিচালক মোঃ টিপু সুলতান ও মূল্যায়ন অফিসার হিজবুল বাহার ভূইয়া, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার শেখ মোহাম্মদ এরশাদ বিন শহীদ। এ সময় রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা মৎস্য বিভাগের ক্ষেত্র সহকারী মিতুন দেওয়ান সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় কর্মকর্তারা বলেন, প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে কাপ্তাই হ্রদের মাছের অভয়ারন্য সৃষ্টি করতে। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশ বৃদ্ধি জন্য মাছ শিকার বন্ধকালীণ সময়ে যদি জেলেরা হ্রদে মাছ না ধরে তাহলে মাছে বংশ বৃদ্ধি হবে। গত বছর বিজুমনি চাকমাকে ৬ টি ছাগল দেয়া হয়েছে। আজ আমরা সরজমিনে দেখতে পেয়েছি বিজুমনি চাকমা
আসলেই সফল একজন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হযেছে। আশা করছি তিনি আগামী মাছ শিকার বন্ধকালীণ সময়ে হ্রদ মাছ শিকার করবে না। আমরা তার কর্মসংস্থার সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি। কর্মকর্তারা এই প্রকল্পের আরো ব্যাপকতা বাড়ানো এবং সরকারের উন্নয়ন কাজের অংশ হিসাবে এই প্রকল্প টি একটি দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।