\ নিজস্ব প্রতিবেদক \
নিয়মবর্হিভূত ভাবে রাঙ্গামাটি খাদ্য গুদাম গুলোতে চলছে শ্রম ও হস্তার্পন কার্যক্রম। এই কার্যক্রম বন্ধ ও শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে পুনরায় কাজ দেয়ার দাবী জানিয়েছেন ঠিকাদাররা। এদিকে খাদ্য বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের স্বেচ্ছাচারিতা ও গুদাম গুলোতে বিভিন্ন অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা।
অপরদিকে তিন পার্বত্য জেলা সহ চট্টগ্রামের খাদ্য বিভাগ ও খাদ্য গুদামে কর্মকর্তা কর্মচারীদের দুর্নীতি অনিয়ম চরম শিখরে পৌচেছে। খাদ্য গুদামে মালামাল হ্যান্ডলিং সংক্রান্ত দরপত্রের পূর্বের নিয়ম পরিবর্তন করে প্রথমবারের মতো এসটিডি পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করে নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। খাদ্য বিভাগের অসাধু কর্মকর্তারা একটি বিশেষ গ্রুপকে কাজ দেয়ার জন্য খাদ্য বিভাগের নিয়ম বহিভূত হ্যান্ডেলিং দরপত্র আহবান করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিন পার্বত্য জেলা সহ চট্টগ্রামের ঠিকাদাররা।
সম্প্রতি তিন পার্বত্য জেলা সহ চট্টগ্রামের ঠিকাদাররা খাদ্য মন্ত্রী, খাদ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব এবং উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য আবেদন করলেও এখনো পর্যন্ত কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ক্ষোভ বাড়ছে ঠিকাদারদের মাঝে। যে কোন মুহুর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান সহ চট্টগ্রামের খাদ্য গুদামের মালামাল পরিবহন কার্যক্রম।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত¡াধিকারীরা জানান, ঢাকার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ পায়ে দেয়ার পায়তারা শুরু করেছে খাদ্য বিভাগের উদ্ধৃতন কর্মকর্তারা। বিষয়টি জানতে পেরে রাঙ্গামাটি জেলায় দীর্ঘদিন ধরে শ্রম ও হস্তার্পন (হ্যান্ডলিং) কাজে জড়িত টিকাদারী প্রতিষ্টান এই কার্যক্রম বন্ধ করে সাধারণ ঠিকাদারদের কাজ দেযার জন্য হাই কোর্টে একটি মামলা দায়ের করে। হাই কোর্ট মামলা নিস্পিত্তি না হওয়া পর্যন্ত চলমান ঠিকাদারী প্রতিষ্টানকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন। কিন্তু রাঙ্গামাটির কিছু অসাধু কর্মকর্তা এই রাযকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নিজেরাই শ্রম ও হস্তার্পন (হ্যান্ডলিং) কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। এমতাবস্থায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলোকে কাজ দেয়ার দাবী জানান ব্যবসায়ীরা।
এদিকে ঢাকার কয়েকটি প্রতিষ্টানকে কাজ পায়ে দেয়ার পায়তারায় খাদ্য বিভাগের দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক চট্টগ্রাম কর্তৃক ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর ১৬টি এলএসডি খাদ্যগুদামের দুই বছরের জন্য শ্রম ও হস্তার্পণ (হ্যান্ডলিং) ঠিকাদার নিয়োগের আহ্বান করা হয়। হ্যান্ডলিং সংক্রান্ত দরপত্রের পূর্বের নিয়ম পরিবর্তন করে প্রথমবারের মতো এসটিডি পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ১০০ নম্বর ভিত্তিক উক্ত দরপত্রে প্রতিটি ২০ নম্বর করে ৫টি মানদ- নির্ধারণ করা হয়।
ঢাকার যে প্রতিষ্টান গুলোকে কাজ দেয়ার পায়তারা করছে প্রতিষ্ঠান গুলো হচ্ছে দরপত্রের ‘অতীত কার্য সম্পাদনের উৎকর্ষতা নির্ধারণ সংক্রান্ত ফরমে’ মানদ- ৩ এবং ৪-এ যে বিশেষ শর্ত আরোপ করা হয়েছে তার শতভাগ হাসান এন্ড কোং, আসাদ ট্রেডিং, তানজিলা এন্টারপ্রাইজ এবং রাজ্জাক এন্টারপ্রাইজের নেতৃত্বে আরও ২-৩ জনের সমন্বয়ে গঠিত গ্রুপ ব্যতীত অন্য কোন ঠিাকাদারের নেই।
এদিকে খাদ্য বিভাগের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী টাকার বিনিময়ে বিশেষ গ্রুপকে কাজ দিতে খাদ্য বিভাগ এসটিডি পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করে- এমন অভিযোগ এনে ৮২ জন ঠিকাদার ওই দরপত্র বাতিল করতে খাদ্যমন্ত্রী, খাদ্য সচিব এবং খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে মেসার্স রোহান এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার মোঃ আকতার হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা খাদ্য বিভাগের সাথে ব্যবসা করছি। এ ধরনের অভিনব টেন্ডার কখনও দেখিনি। আজগোবী টেন্ডারের কারণে আমরা মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। মামলা করার পর আমার পুরনো যারা রয়েছি তারাই কাজটি চালিয়ে যাবো। কিন্তু তা না কারে অফিস কিভাবে এই শ্রম ও হস্তার্পন হ্যান্ডলিং কাজ করবে। তিনি বলেন আমরা ৮২ জন ঠিাকাদার এই দরপত্র বাতিল করার জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে খাদ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
মেসার্স এয়ার মোহাম্মদ এন্ড ব্রাদাসের মারিক এয়ার মোহাম্মদ ও মেসার্স বি.এস. ট্রেডিং এর মালিক পংকজ কান্তি দাশের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘ বছর দরে খাদ্য বিভাগের সাথে আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এখানে কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের যোগ সাজসে ঢাকার কয়েকটি কোম্পানীকে কাজ দেয়ার জন্য তারা এই বিরল টেন্ডারটি দিয়েছে। তিনি বলেন, যে জেলায় যার অভিজ্ঞতা বেশী তাকেইতো কাজ টা দেয়া দরকার। কিন্তু এই টেন্ডারে শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে। তাই আমরা এই টেন্ডার বাতিলের দাবী জানিয়েছি।
রাঙ্গামাটি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কানিজ জাহান বিন্দু বলেন, এখানে হাইকোর্ট কোন ভাবেই অমান্য করা হযনি। ঠিকাদারদের মামলার কারণে আমরা নিয়োগ দিতে পারিনি। নিয়োগ দিতে না পারায় অফিসের মাধ্যমে মালামাল হ্যান্ডলিং চলছে। আমাদের কার্যক্রমতো কোন ভাবেই বন্ধ রাখতে পারি না। আমাদের কার্যক্রম সুন্দর মতোই চলছে। আমরা প্রতি মাসে রিপোর্ট উদ্ধৃতন কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি। অফিসের কার্যক্রমে কোন ধরনের অনিয়ম এখনো পর্যন্ত আমার কাছে আসেনি।