আজ বিজয়া দশমী মন্দিরে মন্দিরে চলছে বিজয়ার অঞ্জলী

রাঙ্গামাটি

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
সব পূজামন্ডপের বাতাসেই এখন বিষাদের ছায়া। হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের ঘরে ঘরে মন খারাপের দিন। ঢাক-কাঁসরের বাদ্যি-বাজনা আর পূজারি ও ভক্তদের পূজা-অর্চনায় কেবলই মা দুর্গার বিদায়ের আয়োজন। সকাল থেকে প্রতিটি মন্দিরে মন্দিরে চলছে বিজয়ার অঞ্চলী প্রদানের আনুষ্ঠানিকতা। বিকালে কাপ্তাই হ্রদে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে ৫ দিনের বিজয়া দশমীর সমাপ্তি ঘটবে আজ।

শুক্রবার শুভ বিজয়া দশমী। হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান পাঁচ দিনের দুর্গাপূজা শেষ হবে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। মর্ত্যলোক ছেড়ে বিদায় নেবেন মা। অশ্রুসজল চোখে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বিসর্জন দেবেন প্রতিমা। পাঁচ দিনের সার্বজনীন মিলনমেলা ভাঙবে আজ।

শুক্রবার সকাল ৮টা ২৪ মিনিটের মধ্যে দশমীবিহিত পূজা শুরু ও পূজা শেষে দর্পণ বিসর্জন দেওয়া হবে। এরপর সারাদেশে স্থানীয় আয়োজন ও সুবিধামতো সময়ে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে। তবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত বছরের মতো এবারও বিজয়া শোভাযাত্রা হচ্ছে না। সব মন্ডপ ও মন্দিরের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিমা বিসর্জনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সর্বত্র বিসর্জন শেষে ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ করবেন।

বিজয়া দশমী উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ স্যাটেলাইট টেলিভিশনগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করবে বিশেষ সংখ্যা ও নিবন্ধ। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃৃতিক সংগঠনের নেতারা হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি শুভ বিজয়ার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে পৃথক বিবৃতি দিয়েছেন।
বিজয়া দশমীতে আজ দেশজুড়ে মন্দির-মণ্ডপে সীমিত পরিসরে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আরতি প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কীর্তন, নাটক, কবিগান, স্বেচ্ছায় রক্তদান ও প্রসাদ বিতরণ করা হবে। মন্ডপে মন্ডপে রয়েছে পুষ্পাঞ্জলি, ভোগ-আরতিসহ অন্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালাও।

বৃহস্পতিবার পাঁচ দিনের দুর্গোৎসবের চতুর্থ দিনে ছিল মহানবমী। সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দেবীর মহানবমী কল্পারম্ভ ও মহানবমীবিহিত পূজা শুরু হয়। পূজা শেষে পুষ্পাঞ্জলি ও সন্ধ্যায় ভোগ-আরতি করা হয়।
মহানবমীর দিনটিতে মা দেবী দুর্গাকে বিদায়ের আয়োজনে বিষণ্ণ মন নিয়েই পূজার আনন্দে মেতেছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ। রাঙ্গামাটির মন্দির মেলাঙ্গনের কেন্দ্রীয় পূজামন্ডপসহ মন্দির-মন্ডপে দর্শনার্থীর ভিড় ছিল আগের তিন দিনের তুলনায় অনেকটাই বেশি।

তবে সারা দেশের সহিংসতায় ও মন্দির ভাঙ্গার প্রতিযোগিতায় প্রভাবপড়েছে রাঙ্গামাটির মন্দির পাড়া গুলোতেও। এই কারণে রাঙ্গামাটির মন্দির গুলোতেও যে হারে দর্শনার্থী থাকার কথা ছিলো তা ছিলো না। তার পরও আয়োজক কমিটির গভীর রাত পর্যন্ত মন্দিরে আরতি ও উপসনার মধ্যে দিয়ে আনন্দ উল্লাসের মধ্যে দিয়ে পূজার সমাপ্তি ঘটায়।