মহা ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে রাঙ্গামাটি ৪১ টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে

রাঙ্গামাটি

॥ নিউজ ডেস্ক ॥

পাঁচদিন ব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজা ১১ অক্টোবর সোমবার মহা ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে সনাতন সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দূর্গোৎসব। এবছর রাঙ্গামাটি জেলায় ৪১ টি পূজা মন্ডপে পূজা অর্চনার মধ্যে দিয়ে শারদীয় দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১৫ অক্টোবর শুক্রবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে বাঙালির প্রাণের উৎসব শারদোৎসবের।

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এ ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে এখন সারাদেশে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দুর্গাপূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশজুড়ে পূজা মন্ডপগুলো বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হয়েছে।

বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুযায়ী, দেবী দুর্গা এবার আসছেন ঘোটকে অর্থাৎ ঘোড়ায় চড়ে। ঘোড়া এমন একটি বাহন যা যুদ্ধের সময়ে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ঘোড়ার পায়ের শব্দও যুদ্ধেরই ইঙ্গিত দেয়। তাই পঞ্জিকা মতেই ঘোটকে আগমন মানেই ছত্রভঙ্গের কথাই বলা হয়। অর্থাৎ এই সময়ে যুদ্ধ, অশান্তি, হানাহানির সম্ভাবনা থাকে। পঞ্জিকা বলছে, মা দুর্গার এবার দোলায় গমন। দোলায় গমনের ফলাফল হল মড়ক লাগা।

রবিবার (১০ অক্টোবর) সারাদেশের পূজামন্ডপ গুলোতে মহাপঞ্চমীর আনুষ্ঠানিকতা দুর্গা দেবীর বোধন অনুষ্ঠিত হয়। শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রাক্কালে এই বোধনের মাধ্যমে দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনা পূজা করা হয়। মন্ডপে-মন্দিরে পঞ্চমীতে সায়ংকালে তথা সন্ধ্যায় এই বন্দনা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। ১১ অক্টোবর মহাষষ্ঠী, ১২ অক্টোবর মহা সপ্তমী, ১৩ অক্টোবর মহা অষ্টমী, ১৪ অক্টোবর মহা নবমী এবং ১৫ অক্টোবর মহা দশমী। এবার সারাদেশে ৩২ হাজার ১১৮টি পূজামন্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

রাঙ্গামাটি জেলায় ৪১ টি পূজা মন্ডপ গুলোর হচ্ছে রিজার্ভ বাজারের শ্রী শ্রী গীতাশ্রম মন্দির, আইচ ভবনপূজা মন্ডপ রিজার্ভ বাজার, শ্রী শ্রী বিশ^নাথ মন্দির নতুন জালিয়া পাড়া, শ্রী শ্রী হরি মন্দির ১৬ নং টিলা, শ্রী শ্রী রক্ষাকালী মন্দির তবলছড়ি, শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, স্বর্ণটিলা, শ্রী শ্রী শীতলা মন্দির আসামবস্তী, শ্রী শ্রী নারায়ন মন্দির পুরাতন বাস স্টেশন, শ্রী শ্রী কালী মন্দির ভেদভেদী, শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির কলেজ গেইট, শ্রী শ্রী দশভ’জা মাতৃ মন্দির, দক্ষিণ কালিন্দপুর, শ্রী শ্রী দুর্গা মাতৃ মন্দির কাঠালতলী, শ্রী শ্রী অখন্ড মন্দির গর্জনতলী, শ্রী শ্রী কালী মন্দির, কিল্যামুড়া।

কাপ্তাই উপজেলায় ৭ টি পূজা মন্ডপে এবার পূজা অনুষ্ঠিত হবে। মন্ডপ গুলো হচ্ছে শ্রী শ্রী ত্রিপুরা সন্দুরী মন্দির রাইখালী বাজার, শ্রী শ্রী দক্ষিণেশ^রী কালী মন্দির মিশন এলাকা, শ্রী শ্রী আদি নারায়ন বৈদান্তিক গীতা মন্ডপ, মিশন এলাকা, শ্রী শ্রী প্রকল্প হরি মন্দির কয়লার ডিপো চন্দ্রঘোনা, শ্রী শ্রী জয় গীতা সংঘ, লোকনাথ মন্দির, চন্দ্রঘোনা, শ্রী শ্রী জয় কালী মন্দির লক গেইট, শ্রী শ্রী সার্বজননীন মাতৃমন্দির ব্রিক ফিল্ড এলাকা। কাউখালী উপজেলায় ৪ টি পূজা মন্ডপে এবার পূজা অনুষ্ঠিত হবে। মন্ডপ গুলো হচ্ছে শ্রী শ্রী ত্রিপুরা গীতা মন্দির কাউখালী বাজার, শ্রী শ্রী রাধা কৃষ্ণ মন্দির, তালুকদারপাড়া, বেতবুনিয়া, শ্রী শ্রী হীতা মন্দির মাষ্টাঘোনা বেতবুনিয়া, শ্রী শ্রী গীতা মন্দির ঘাগড়া।

জুরাছড়ি জেলায় শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ বেবাশ্রম যক্ষ¥া বাজার। নানিযারচর উপজেলায় দুটি মন্দিরের মধ্যে বুড়িঘাট জগন্নাথ মন্দিরে ঘটপূজা এবং নানিয়ারচর জগন্নাথ মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। বিলাইছড়ি উপজেলায় ১টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে শ্রী শ্রী হরি মন্দির বিলাইছড়ি বাজার।

লংগদু উপজেলায় ৩ টি পূজা মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে মন্দির গুলো হচ্ছে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম তিনটিলা, শ্রী শ্রী হরি মন্দির মাইনীমুখ বাজার, শ্রী শ্রী শিব মন্দির, জালিয়া পাড়া। বরকল উপজেলায় ২ টি পূজা মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। মন্ডপ গুলো হচ্ছে শ্রী শ্রী হরি মন্দির বরকল বাজার, শ্রী শ্রী হরি মন্দির সুবলং বাজার।

বাঘাইছড়ি উপজেলায় ৫ টি পূজা মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মন্ডপ গুলো হচ্ছে শ্রী শ্রী রক্ষাকালী মন্দির মারিশ্যা, শ্রী শ্রী হরি মন্দির করেঙ্গাতলী বাজার, শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দির দুরছড়ি বাজার, শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দির মাচালং সাজেক, শ্রী শ্রী কৃষ্ণ মন্দির সাজেক, বাঘাইহাট, বাঘাইছড়ি।

রাজস্থলী উপজেলায় ৩ টি পূজা মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে মন্ডপ গুলো হচ্ছে শ্রী শ্রী হরি মন্দির রাজস্থলী বাজার, শ্রী শ্রী দক্ষিণেশ^র কালী মন্দির বাঙ্গালহালিয়া, শ্রী শ্রী কৃষ্ণ মন্দির ছাগলখাইয়া পাড়া বাঙ্গালহালিয়া।

পূরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে তিনি পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজা বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে লংকা যাত্রার আগে শ্রী রামচন্দ্র দেবীর পূজার আয়োজন করেছিলেন শরৎকালের অমাবস্যা তিথিতে, যা শারদীয় দুর্গোৎসব নামে পরিচিত। দেবীর শরৎকালের পূজাকে এজন্যই হিন্দুমতে অকাল বোধনও বলা হয়।

দুর্গোৎসব উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।