প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলার দুটি স্কুল ও বাড়ীঘর প্লাবিত, শহরের আশ্রয় কেন্দ্রে ১২৭ জন আশ্রয় গ্রহণ

রাঙ্গামাটি

\ নন্দন দেবনাথ, \

গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে রাঙ্গামাটি জনজীবনে দূর্ভোগ নেমে এসেছে। সকালে বৃষ্টি না থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে আবারো বৃস্টি শুরু হওযায় আতংক ছড়িয়ে রাঙ্গামাটিবাসীর মাঝে। রাঙ্গামাটি পৌর শহর সহ বিভিন্ন উপজেলার সড়ক ও পাহাড় ধ্বসের ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে রাঙ্গামাটি জেলার জুরাছড়ি উপজেলার স্কুল, বসতঘর শাক সবজির ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে। রাঙ্গামাটি শহরের ২ টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১২৭ জন আশ্রয় গ্রহণ করেছে।
রাঙ্গামাটি জুরাছড়ি উপজেলার সাধারণ মানুষেরা জানান, গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে পাহাড়ী ফলের কারণে উপজেলার মৈদং ইউনিয়নের জামুরাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শীলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। জুরাছড়ি উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রূপময় চাকমা বিষযটি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে টানা বৃষ্টিপাতে জুরাছড়ি, বনযোগীছড়া, মৈদং ও দুমদুম্যা ইউনিয়নে বসত ঘর প্লাবিত এবং ধান্য জমিসহ বিভিন্ন শাক-সবজি পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে। রাস্তাঘাট প্লাবিত হওয়াই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে।

৫দিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন তাকায় জনজীবনে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন হোটেলে ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবী হোটেল মালিকদের।

বনযোগীছড়া ইউপি চেয়ারম্যান সন্তোষ বিকাশ চাকমা বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। এতে গ্রাহকদের চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মাসুদ রানা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন থেকে ১১ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে এখনো কেউ উঠেনি।

এদিকে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আসমা জানান রাঙ্গামাটি পৌর শহরে বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধ্বসের আশংকায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী জনগনকে দুটি আশ্রয় কেন্দ্রে উঠিয়ে আনা হয়েছে। তিনি বলেন, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলায় এখনও পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্র লোকনাথ মন্দিরে ২০ টি পরিবারের ৮২ জন আশ্রিত রয়েছে। এছাড়া রাঙ্গামাটি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে ১০ পরিবারের ৪৫ জন আশ্রিত রয়েছে। দুটি আশ্রয় কেন্দ্রে মোট ১২৭ জনের জন্য আজ রাত এবং আগামীকাল সকাল পর্যন্ত খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসা এর জন্য স্যালাইন, প্যারাসিটামল, ফ্লাজিল সরবরাহ করা হয়েছে।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্ল্যাহ জানান, রাঙ্গামাটিতে যে কোন দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসন সর্বাত্মক প্রস্তুত রয়েছে। প্রবল বর্ষণের ফলে যাতে কোন প্রকার প্রাণহানীর ঘটনা না ঘটে তার জন্য প্রতিটি এলাকায় স্বেচ্চাসেবক টিম গঠন করা হয়েছে। যে কোন দূর্যোগ দেখলে মাঠে থাকে জেলা প্রশাসনের রেসকিউটি টিমের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক টিম।