রাঙ্গামাটিতে যুব দলের নামে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার প্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন

রাঙ্গামাটি

॥ বিশেষ প্রতিবেদক ॥

রাঙ্গামাটি শহরে যুব দলের সহ সম্পাদক ভুমি দস্যু কর্তৃক নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার প্রেক্ষিতে শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সকালে বাসার সামনে সংবাদ সম্মেলন ভুক্তভোগী আমীর আলী।
লিখিত বক্তব্যে আমীর আলী বলেন, অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় আবচার যুবদলের সহ সম্পাদক পদবীর ক্ষমতা অপব্যবহার করে ভুমি দস্যু হিসাবে জনশ্রুতি রয়েছে। আবচার গং দীর্ঘদিন ধরে ভুমিদস্যু কর্তৃক হয়রানী, হুমকি, ভূমি দখলের প্রতিযোগিতায় নিজেই আর্থিক, মানসিক ও শাররিক হয়রানীর শিকার হয়ে আসছি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আদালতের স্বরণাপন্ন হইয়া ৭ বার রায় পেয়েছি এবং আদালত কর্তৃক আমিন, কানুনগোসহ ম্যাজিস্ট্রেট পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই আবচার গং ৪ বার রেকর্ড জায়গা ৩৩ শতক খাস ভুমি দেখিয়ে বিক্রয় করে আমির আলী আবার ক্রয় করতে হয়েছে।

অতি দুঃখের বিষয় জানাচ্ছি যে, মোঃ হোসেনের তিন ছেলে চিহ্নিত ভূমিদস্যু চাঁদাবাজের জোর অভিযোগ। আমি মোঃ আমির আলী গত ৭ তারিখ ১১ মাস ২০২৪ইং তারিখে আনুমানিক সাড়ে ১০টার সময় আমার বসতবাড়ির সামনে মেইন সড়কের পশ্চিম পার্শে রাঙ্গামাটি রেডিও বেতারের সংলগ্ন ৬নং ওয়ার্ড আমার নামীয় রেকর্ডীয় জায়গাতে ৫টি দোকান ভাড়াঘর নির্মাণের জন্য রাজমিস্ত্রি কাজ করছে। আমার বসতবাড়ির উত্তর পার্শ্বে থাকেন ৬নং ওয়ার্ড এর বাসিন্দা মোঃ হোসেনের তিন ছেলে আক্তার হোসেন, আবছার হোসেন ও রব্বানি এবং তাদের বোনের জামাই নূর সৈয়দ ও আক্তার হোসেনের বড় ছেলে আমজাদ। মোঃ হোসেনের ৩ ছেলে আরো ২০ হতে ২৫ জন সন্ত্রাসী ছেলে নিয়ে অতর্কিত ভাবে আমার জায়গায় এসে আমার সাথে সীমাহীন খারাপ ব্যবহার করে রাজমিস্ত্রিকে কাজ না করার জন্য বলে দেন। রাজমিস্ত্রির সাথে খুবই খারাপ ব্যবহার করে কাজের স্থান হতে তাড়িয়ে দেন। মোঃ হোসেনের ৩ ছেলে আমাকে বলেন, আমাদের সাথে সমাধান না করা পর্যন্ত তোর সব কাজ বন্ধ থাকবে। তুইও তোর পরিবার নিয়ে শান্তিতে এক মুহুর্ত ও থাকতে পারবিনা। আমাকে আরো বলেন, আমরা তিন ভাইকে রাস্তার পার্শ্বে ৪৫ শতক জায়গা রেজিষ্ট্রি করে দিবি, না হয় আমাদেরকে ২ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ক্যাশ দিবি। একথা বলার পরে আমার বসত বাড়ির সামনে থেকে আমাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। আমাকে নেওয়ার পর আমার ছেলে নিরুপায় হইয়া ৯৯৯ এ ফোন করেন। আমাকে তাদের আস্তানায় নিয়া সীমাহীন নাজেহাল করেছে এবং ৩০০ টাকার ব্লাংক স্টাম্প এ স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য আমার উপর জোর করতে থাকে।

এমন সময় কোতয়ালী থানার এসআই জাহাঙ্গীর সাহেব এসে মোঃ হোসেনের ৩ ছেলের কবল হতে আমাকে উদ্ধার করে আমার বাড়িতে পৌছাইয়া দেন। আমি ২০০৬ সালে রেকর্ডিয় ১ একর ২৫ শতক জায়গা খরিদ করি। উক্ত জায়গায় বিভিন্ন গাছপালা রোপন করি ও একটি বসত বাড়ি নির্মাণ করি। মোঃ হোসেন আমার জায়গার পাশে তার তিন ছেলেকে নিয়ে বসবাস করে আসছিল। আমার নির্মাণ করা বসতবাড়িতে ভাড়া দিয়া থাকার কথা বলে মোঃ হোসেন আমাকে খুব অনুরোধ করে। আমি তার কথায় রাজি হয়ে কার্টিজ পেপারে একটি চুক্তিনামা করিয়া প্রতিমাসে ৬০০ টাকা ভাড়া ধার্য্য করে থাকার জন্য ভাড়া দেই। মোঃ হোসেন আমাকে কথা দেন আমার জায়গাটি পুরো পাহারাদার হিসেবে দেখবেন। মোঃ হোসেন আমাকে ২ মাসের ভাড়া দিলেও আমার থেকে ৮,৪০০/-টাকা হাওলাত হিসেবে নেন। আমার পুরো জায়গাটি মোঃ হোসেনের ৩ ছেলে আমার বসত বাড়িসহ জবর দখল করে নেন। আমি রাঙ্গামাটিতে অনেক নেতৃবৃন্দের কাছে গিয়েও আমার জায়গা থেকে মোঃ হোসেন ও তার ৩ ছেলেকে সরিয়ে দিতে পারিনাই। আমি সম্পূর্ণ নিরুপায় হইয়া ২০০৮ সালে উকিল দুলাল বাবুকে নিয়োগ করে মাননীয় আদালতে একটি উচ্ছেদ মামলা করি যাহার অপরজারি মামলা নং-১৮২।

আমির আলী লিখিত ও মোখিক বক্তব্য আরো জানায়, দীর্ঘ ১৪ বছর মামলা চালিয়ে জেলা জজ আদালতে আমার পক্ষে রায় দেন যে, মোঃ হোসেন ও তার ৩ ছেলেকে আমার জায়গা হতে উচ্ছেদ করে আমার জায়গা আমাকে বুঝাইয়া দেওয়ার জন্য আমাকে আদেশ দেন। ম্যাজিস্ট্রেট, সার্ভেয়ার, কানুনগো, পুলিশ প্রশাসন, জেলা জজ এর নাজেরসহ সরেজমিনে আসে চৌহর্দ্দীসহ পরিমাপ করিয়া আমার জায়গা আমাকে বুঝিয়ে দেন। মোঃ হোসেনের তিন ছেলে সেদিন আমাকে কিছু না বললেও পরদিন যখন আমি জায়গায় যাই তারা আমাকে আমার জায়গায় যেতে বাঁধা দেয়। আমাকে বলে এই জায়গায় আমরা ১৪ বছর ছিলাম। এই জায়গা আমাদের। তোকে আদালত জায়গা বুঝাই দিছে, আদালতের আইন আমরা মানি না। ভেদভেদী হইতে শিমুলতলী এলাকায় আমাদের ৩ ভাইয়ের নিজস্ব একটা আইন আছে। আমাদের আইন দিয়া এলাকা চলে। এই জায়গায় আসলে আমরা ৩ ভাইকে ৬০ লক্ষ টাকা চাঁদা দেওয়া লাগবে। মোঃ হোসেনের তিন ছেলের বিরুদ্ধে সাক্ষি প্রমাণ নিয়া চাদাবাজির মামলা হয় এবং তারা গ্রেফতার হয়। যাহা কোতয়ালী থানার মামলা নং- ১৫। তারা তিনভাই গ্রেফতার হওয়ার পরে আমার জায়গায় আসিয়া আমি একটি পাকা বসত বাড়ি ও ২টি ভাড়া বাসা নির্মাণ করি। ০৭/০৫/২০২৪ইং তারিখে মোঃ হোসেনের ৩ ছেলেসহ আজগর আলী, বিপন ঘোষ, মাহাবুব উদ্দিন, নরেশ মজুমদার আমাকে খুবই অনুরোধ করিয়া বলেন রাঙ্গামাটি সাবেক আওয়ামী লীগ মহিলা এমপি চিনুর বাসায় যাইতে। আমি সরল মনে তাদের কথা মত রাত সাড়ে ১০টায় চিনুর বাসায় যাই এবং দেখি ৭০ থেকে ৮০ জন আওয়ামী লীগ এর কয়েকজন নেতাসহ চিনু এমপির বাসভবন পরিপূর্ণ।

তিনি আরো জানায়, আমি যাওয়ার সাথে সাথে আমার সাথে খুবই খারাপ ব্যবহার করিয়া আওয়ামী লীগের সব লোকজন দিয়ে জোর করিয়া মোঃ হোসেনের তিন ছেলের নেতৃত্বে আমার থেকে জোরপূর্বক খালি স্টাম্পে স্বাক্ষর নেন। আমাকে কথা বলার কোন সুযোগ দেন নাই। ৭ তারিখ বৃহস্পতিবার ছিল। রবিবার দিন অফিস আদালত খোলা বিদায় লিগ্যাল এইড অফিসার জুনাইদ সাহেবকে বুঝাইয়া বলি বিষয়টি। জুনাইদ সাহেব তাদের সাথে যোগাযোগ করিয়া স্টাম্পগুলো উদ্ধার করেন। আমার উক্ত জায়গা ২০০৬ সালে আমি খরিদ করিলেও মোঃ হোসেনের ৩ ছেলে আমাকে আমার জায়গার উপর আমাকে আসতে দেয় নাই। আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের নিয়া আরো আরো কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ মোঃ হোসেনের ৩ ছেলে আমার জায়গাটি প্লট প্লট করে খাস জায়গা বলিয়া ৪ জনের কাছে বিক্রয় করে দিয়াছে। আমার জায়গা দখলে নিলে তাদের কাছ থেকে ঐসব জায়গা আবার খরিদ করিয়াছি। মোঃ হোসেনের ৩ ছেলে এ জায়গা নিয়া আওয়ামী লীগের আমল হইতে ১৮টি বছর আমার উপর জুলুম্ম নির্যাতন করিয়াছে। আমি রাঙ্গামাটিতে কোন প্রশাসন হইতে কোন জায়গায় উচিত বিচার পাইতেছি না। আমি খুবই আতঙ্কিত ও ভয়ে জিবনযাপন করিতেছি। আমি চলার পথে মোঃ হোসেনের ৩ ছেলে আমাকে জানে খুব করাসহ অতর্কিত ভাবে হামলা করিতে পারে এবং আমার ছেলে মেয়ে স্কুল ও কলেজে যাওয়া আসার সময় বড় ধরনের ক্ষতি সাধরণ করিতে পারে। আমার বাড়িতে আসিয়া লুটপাটসহ ডাকাতি করিতে পারে ও আমার নামীয় রেকর্ডিয় উক্ত জায়গা আদালতে ৭ বার ডিগ্রি প্রাপ্ত। উক্ত জায়গার চারপাশে পাকা পিলার দেয়া। তারকাটার ঘিরাবেড়া দেওয়া। সেই ঘিরাবেড়া ভাঙ্গিয়া যেকোন মুহুর্তে আমার জায়গা জবর দখল করিতে পারে। মোঃ হোসেনের তিন ছেলে স্বার্থের জন্য এমন কোন কাজ নাই তারা করতে পারে না। মোঃ হোসেনের মেজ ছেলে আবছার কথায় কথায় বলে সে বিএনপি এর জেলা যুবদল সহ সাধারণ সম্পাদক তার প্রভাব দেখাইয়া ভেদভেদী হইতে শিমুলতলী এলাকায় তার জুলুম নির্যাতন আগের থেকে অনেক বেড়ে গেছে।

আপনাদের মাধ্যমে রাঙ্গামাটির বিএনপি সম্মানিত নেতৃবৃন্দের কাছে আমি বলব বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মানুষের কাছে প্রাণপ্রিয় দল। আমাদের বাংলাদেশে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অনেক অনেক অবদান আছে। তারেক রহমান আগামী বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষের কন্ঠ ও ভবিষ্যৎ। এ দলকে আমি অনেক ভালোবাসি এবং সমর্থন করি। এই মোঃ হোসেনের ছেলে কথায় কথায় এত বড় একটি দলের নাম বিক্রি করলে এটা লজ্জার ব্যাপার। এ আবছার হোসেন ও তার ২ ভাইসহ ভেদভেদী হইতে ৬নং ওয়ার্ডে ভুমিদস্যু হিসেবে পরিচিত। তারা সরকারি জায়গাও দখল করে। মালিকানা রেকর্ডিয় জায়গা পেলে জোরপূর্বক দখল করে। আপনারা ৬নং ওয়ার্ড এ আসিয়া মোঃ হোসেনের ৩ ছেলের ব্যাপারে যাচাই করে দেখেন। জোরপূর্বক জায়গা দখল করিয়া ১ জায়গাকে ৩ বার পর্যন্ত বেচা বিক্রি করে। তাদের ব্যবসা হলো অন্য কারোর জায়গা জোরপূর্বক দখল করিয়া অন্য কারোর কাছে বেচা বিক্রি করা। গত ৭ তারিখ আমার বসত বাড়ির সামনে মেইন সড়কের পশ্চিম পাশে আমার ৫টি দোকানের কাজ ও একটি ভাড়া বাসার কাজ অতর্কিত ভাবে আসিয়া মোঃ হোসেনের ৩ ছেলে লোকজন নিয়া রাজমিস্ত্রিকে তাড়িয়ে দিয়ে আমার কাজ বন্ধ করে দেন। তাদের চাহিদামতো জায়গা ও চাদা দিতে না পারায় ৭ তারিখ হইতে এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে কাজ বন্ধ মোঃ হোসেনের ৩ ছেলে চিহ্নিত ভূমিদস্যু ১নং আক্তার হোসেন, ২ নং আবছার হোসেন ও ৩নং রবিউল হোসেন রব্বানি তাদের বোনের জামাই নূর সৈয়দ ও আক্তার হোসেনের বড় ছেলে আমজাদ হোসেন এই ৫ জনের অন্যায়ভাবে আমার উপর চাওয়া হলো আমার বসতবাড়ির সামনে ৪৫ শতক জায়গা হয়তো তাদের নামে রেজিষ্ট্রি করে দেওয়া আর না হয়ত ২ কোটি বা ২.৫ কোটি টাকা তাদেরকে চাদা দেওয়া। না দেওয়া পর্যন্ত আমি কোনো কাজ করতে পারব না। তারা আমাকে কথায় কথায় বলে এখনো সময় আছে রাঙ্গামাটি ছেড়ে তোর পরিবারসহ অন্যত্র চলে যা। রাঙ্গামাটিতে তুই থাকলে তোর সব জায়গাজমিন আমাদেরকে দিয়েও তুই বাচতে পারবি না।

২০২২ সালে আমরা তিন ভাইকে মাত্র ৬০ লক্ষ টাকা চাদা চাইছিলাম। তুই মামলা করি আমরা তিন ভাইকে এরেস্ট করাইসছ। এই প্রতিশোধ আমরা তোর থেকে পাই পাই করে হিসাব করবো। রাঙ্গামাটি প্রশাসনের কাছে আমার বিনীত ভাবে অনুরোধ মোঃ হোসেনের তিন সন্ত্রাসী ছেলের থেকে আমি এবং আমার পরিবারসহ বাচতে পারি সেমতে আইন ও পর্যাপ্ত সহযোগিতা করলে আল্লাহ খুশি হইবে এবং আমি অত্যান্ত কৃতজ্ঞ থাকব। তারিখঃ ২৯/১১/২০২৪ইং উল্লেখ থাকে নির্মান কাজ বন্ধ রাখার ফলে নির্মান সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পর পর দুই দফা স্থানীয় বৈঠক হয়েছে। তাদের উচ্ছৃঙ্খলতা কারনে বৈঠক হয়নি। এই সময়ে নিজেই স্বীকার করেছে নির্মান কাজ বন্ধ রাখা, আমির বাসায় প্রথমে ভাড়া থাকা ও খাস ভুমি বলে রেকর্ডীয় তুমি বিক্রয় করা। তবে চাঁদাবাজি অপহরনের কথা অস্বীকার আবচার। তার বিরুদ্ধে বিজিবি পাহাড় দখল বানিজ্য ওআবচার আপন চাচাতো ভাই অভিযোগ করে।

এদিকে অভিযোগকারীদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, সাংবাদিক সম্মেলন করে আমির আলির যে সকল অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানেয়াট। সাংবাদিক সম্মেলনে সে দাবি করেছে যে তার কাছ থেকে ২ কোটি ২৫ লক্ষ চাঁদা দাবি করেছি তা মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য প্রদান করেছে। সে প্রত্যেক বার ভিন্ন ভিন্ন চাদাঁর টাকার কথা বলে বোঝা যায় সে মিথ্যা কথা বলছে। আর নির্মাণ কাজ বন্ধের সাথে আমাদের কোন সর্ম্পক নেই। আর সাংবাদিক সম্মেলনে আমাদের ব্যাপারে যে সকল অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়া। দীর্ঘ ১৬ বছরের পতিত সৈরাচারের দোসর আমির আলির অত্যাচার নিপিরণ করে আসতে আমাদের উপর।