॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে সকালে রাঙ্গামাটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্যে দিয়ে বীর শহীদের বিনম্্র শ্রদ্ধা জানালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা ও বোর্ডের সদস্যরা।
পরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড রাঙ্গামাটি কার্যাললে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা।
এ সময় ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল আলম চৌধুরী, সদস্য প্রশাসন ইফতেকার আহমেদ, সদস্য পরিকল্পনা মোঃ জসিম উদ্দিন, বোর্ডে উপ- পরিচালক কাইংওয়াই ম্রো, নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আজ বোর্ডের প্রধান কার্যালয়স্থ মাইনী মিলনায়তনে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব নিখিল কমার চাকমা এর সভাপতিত্বে মহান বিজয় দিবস ২০২২ এর কর্মসূচির অংশ হিসেবে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বোর্ডের গবেষণা কর্মকর্তা কাইংওয়াই ম্রো এর উপস্থাপনায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ স্বাধীনতা মহান স্থপতি বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল বীর শহীদ, জীবিত মুক্তিযোদ্ধা ও দুই লক্ষ সম্ভ্রম হারানো মা বোনদের প্রতি গভীর বিন¤্র শ্রদ্ধা নিবেদন ও ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনা শুরুতে কর্মকর্তা/কর্মচারীদের উপস্থিতিতে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর সভাপতিসহ অতিথিবৃন্দ মঞ্চে আসন গ্রহণ ও পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়।
চেয়ারম্যান বলেন যে, নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মাধ্যমে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠিত করতে পারা পৃথিবীতে বিরল ঘটনা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে ১৬ই ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিশ^াসী বাংলাদেশ হিসেবে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। তিনি আরোও বলেন যে, আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভেীম রাষ্ট্র পেয়েছি, এটি সত্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন মুক্তিযুদ্ধ চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিশ^াসী বিরোধীরা উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বিঘিœত করার জন্য প্রকাশে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তিনি এসব ষড়যন্ত্রকারী স্বাধীনতা বিরোধী কুচক্রী মহলকে চিহ্নি করে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানসহ নতুন প্রজন্মদের এ বিষয়ে সজাগ থাকার আহবান জানান।
বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান বলেন যে, পাক বাহিনীরা বাংলার মানুষকে সীমাহীনভাবে শোষন করতো। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ বিষয়টি অন্তর দিয়ে উপলব্ধী করতে পেরেছিলেন। তাই পাক বাহিনীদের শোষনের হাত থেকে বাংলার মানুষকে মুক্তি দেয়ার জন্য বিভিন্ন সময় তিনি আন্দোলনে নেতৃত্বে দেন। বঙ্গবন্ধু’র ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ ”এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম…” স্লোগানের মাধ্যমে বাংলার মানুষ উজ্জীবিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীদের শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তোলার মাধ্যম অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়। এছাড়া তিনি বঙ্গবন্ধু’র সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি মৌলিক স্তম্ভ-স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনামি, স্মার্ট গর্ভনমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। আগামী ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে হলে এ চারটি মৌলিক স্তম্ভকে যথাযথভাবে বাস্তবায়নে সকলকে একসাথে কাজ করার আহবান জানান।
এসময় বোর্ডের সদস্য প্রশাসন জনাব ইফতেখার আহমেদ, সদস্য পরিকল্পনা জনাব মোঃ জসীম উদ্দিন, বোর্ডের উপপরিচালক জনাব মংছেনলাইন রাখাইন, রাঙ্গামাটি নির্বাহী প্রকৗশলী জনাব তুষিত চাকমা, টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের জেলা প্রকল্প ব্যবস্থাপক জনাব মন্জু মানষ ত্রিপুরা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন প্রমুখ মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য হিসেবে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করেন। মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বার্ডের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় সকালে রাঙ্গামাটির তবলছড়িস্থ আনন্দ বৌদ্ধ বিহারে বিশেষ প্রার্থনা, দুপুরে বোর্ডের জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া মাহ্ফিলসহ তবারক বিতরণ এবং সন্ধ্যায় তবলছড়িস্থ শ্রী শ্রী রক্ষা কালি মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।