বিলাইছড়ি উপজেলা কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারে ৪৪তম দানোত্তম কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত

রাঙ্গামাটি

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক, বিলাইছড়ি ॥

পঞ্চশীল প্রার্থনাসহ ধর্মীয় আচার পালনের মধ্যদিয়ে রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারে ৪৪তম দানোত্তম কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে চীবর দানানুষ্ঠান সংঘদান, অষ্ট পরিস্কার দান, বৌদ্ধ মুর্তি দান, হাজার বাতি দানসহ বিভিন্ন দানের মধ্যদিয়ে দানানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রধান ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন, গুইমারা চুলা মনু আনন্দ বৌদ্ধ বিহারে অধ্যক্ষ ভদন্ত উ. ওয়েন্না মহাথের, দেশনা দেন রাঙ্গুনিয়া বকা বিলি ত্রিরতœ বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ধর্ম মৈত্র ভিক্ষু ও বিলাইছড়ি নিরিবিলি ভাবনা কুঠিরের অধ্যক্ষ ভদন্ত মহাকাল থের।

অনুষ্ঠানে প্রধান পুর্ণার্থী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি।

বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি কমিটির সভাপতি ভদ্রসেন চাকমার সভাপতিত্বে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, বিলাইছড়ি জোনের ক্যাপ্টেন বিপুল কান্তি পাল, সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য অভিলাষ তঞ্চঙ্গ্যা, খারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিদ্যালাল তঞ্চঙ্গ্যা। পরে দীপংকর তালুকদার এমপি বৌদ্ধ ভিক্ষুকদের হাতে চীবর উৎসর্গ করেন।
ধর্মসভা ও পঞ্চশীল গ্রহণের পর চীবর দানের মাধ্যমে ‘মুক্তির অহিংসা বাণী ছড়িয়ে যাক মানুষে মানুষে এবং সামনের দিনগুলোতে শান্তি ফিরে আসুক ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের’ এমন প্রার্থনার মধ্যদিয়ে চীবর দানের সমাপ্তি ঘটে।

উল্লেখ্য, মহামতি বুদ্ধের প্রজ্ঞাদীপ্ত শিক্ষা ‘বর্ষাবাস তথা বর্ষাব্রত’ পালনের সমাপনী অনুষ্ঠান শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা এবং দানোত্তম কঠিন চীবর দান উৎসব হলো বৌদ্ধদের অতি পবিত্র ও মাহাত্ম্যপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এ পূত-পবিত্র অনুষ্ঠান-উৎসবের মধ্যদিয়ে বৌদ্ধরা তথাগত গৌতম বুদ্ধের পরম কল্যাণময় শিক্ষা চর্চার ব্রত হয়। হিংসা ক্রোধ ও মোহের বদলে প্রেম দয়া ও ক্ষমায় মানুষের কল্যাণে তপস্যা ভিক্ষুদের। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্রকে বলা হয় চীবর। তাই এ বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের পরিধেয় বস্ত্রের অভাব দুর করতেই কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান। তাই বৌদ্ধদের কাছে প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান অত্যন্ত গুরুত্ববহ পুণ্যানুষ্ঠান।