সচেতনতার অভাব ও কুসংস্কারের কারণে পার্বত্যাঞ্চলে কুষ্ঠ রোগ নির্মূল হচ্ছে না
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
গত ৯ মাসে তিন পার্বত্য (রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি) জেলায় ১০২ জন কুষ্ঠ রোগীর শনাক্ত করেছে কুষ্ঠ রোগ নিয়ে কাজ করা বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা লেপ্রোসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা, রাঙ্গামাটির বরকল উপজেলার কালাপুন ছড়া, আন্দারমানিকসহ দুর্গম সীমান্তবর্তী এলাকা, জুরাছড়ি উপজেলার দুমদুম্যা ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা, বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বেশী। সচেতনতার অভাব, কুসংস্কারের কারণে রোগীরা চিকিৎসার আওতায় আসছে না। ফলে পার্বত্য চট্টাম থেকে এ রোগ নির্মুল করা যাচ্ছে না।
বুধবার (১২ অক্টোবর) সকালে রাঙ্গামাটি শহরের মোটেল জজে লেপ্রোসির এনুয়েল লার্নিং রিভিউ ওয়ার্কশপে এ তথ্য জানায়, লেপ্রোসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন, রাঙ্গামাটি সিভিল সার্জন ডাক্তার বিপাশ খীসা। এ সময় তিনি বলেন, বছরের রিপোর্ট দেখে বুঝা যাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে কুষ্ঠ রোগ বাড়েও না কমেও। প্রতি বছর একই পরিমাণ রোগী শনাক্ত হচ্ছে। এ রোগ নির্মূল করতে হলে কুষ্ঠ রোগ প্রবন এলাকাগুলো চিহ্নিত করে সেখানে বেশী কাজ করতে হবে। ম্যালেরিয়া নির্মূলের জন্য রাঙ্গামাটি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সেভাবে কাজ করছে। লেপ্রোসিকে সে পথ অবলম্বন করতে হবে।
কর্মশালা শুরু আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের কুষ্ঠ রোগের অবস্থা নিয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লেপ্রোসি পার্বত্য চট্টগ্রাম ম্যানেজার পরশ চাকমা।
এ সময় তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের যেখানে দুর্গমতা, পুষ্টি এবং স্যানিটেশনের অভাব রয়েছে সেসব এলাকায় কুষ্ঠ রোগের প্রবনতা দেখা যায়। এসব এলাকার মানুষ রোগটি সম্পর্কে যেমনি অসচেতন তেমনি তারা কুসংস্কারে বিশ্বাসী। কুষ্ঠ রোগ যে চিকিৎসায় ভাল হয় সেটা তারা জানে না। সমাজ থেকে বিতাড়িত হবার ভয়ে রোগটির সম্পর্কে তথ্য লুকায়। এদের কুষ্ঠরোগ বললে এরা মনে কষ্ট পায়। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে যখন রোগের শেষ পর্যায়ে চলে যায় তখন তারা চিকিৎসার নিতে আসে। তখন চিকিৎসায় ভাল হলেও এরা প্রতিবন্ধী হয়ে যায়।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডাক্তার বিনোধ শেখর চাকমা, জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিশ্বজিৎ চাকমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন লেপ্রোসি প্রোগ্রাম লিডার জন অর্পন সমদ্দার।