ঐক্য না থাকায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ রাঙ্গামাটির সম্মেলনের ১০ দিন আগে আহবায়ক স্বপন কুমার মল্লিকের পদত্যাগ

রাঙ্গামাটি

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

বাংলাদেশ পূজা উদ্্যাপন পরিষদ রাঙ্গামাটির সম্মেলনের ১০ দিন আগে পদত্যাগ করলেন পূজা উদযাপন পরিষদ রাঙ্গামাটির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক স্বপন কুমার মল্লিক। গতকাল তার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোষ্টের মাধ্যমে পতদ্যাগের কথা জানান। বাংলাদেশ পূজা উদ্্যাপন পরিষদ ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির মতান্যক্যে এবং রাঙ্গামাটি সনাতন সমাজকে আবারো দুইভাবে বিভক্ত করে দেয়ার পায়তারা চলছে জেনে তিনি পত্যাগত করেছেন বলে জানান।

পতদ্যাগ পত্রে তিনি বলেন, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক হই। গত ২৫ মার্চ তারিখে আমাকে দায়িত্বভার অর্পন করা হয়। অদ্য ৬ জুন তারিখে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সহিত মত ঐক্য না হওয়ার কারণে প্রস্তুতি কমিটির আহবায়কের পদ থেকে অব্যাহতি দিলাম।

উক্ত অব্যাহতি পত্র গ্রহণে সভাপতি মহোদয়ের সম্মতি প্রদানে মর্জি হয়। নিবেদক স্বপন কুমার মল্লিক, আহবায়ক সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ২০২২।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক স্বপন কুমার মল্লিক বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি যে আহবায়ক কমিটি গঠন করে দিয়েছে তা মানানসই হয়নি। দুটি কমিটির মধ্যে থেকে সমন্বয় করে যদি সিনিয়র পার্সনদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হতো তাহলে আমরা একটি সুন্দর সম্মেলন উপহার দিতে পারতাম। যে টি নিয়ে বিতর্ক সেই দুটি কমিটির সমন্বয়ে যদি কমিটি গঠন করা হতো তাহলে আজ আমাকে পদত্যাগ করতে হতো না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পূজা উদ্্যাপন পরিষদ ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির মতান্যক্যে এবং রাঙ্গামাটি সনাতন সমাজকে আবারো দুইভাবে বিভক্ত করে দেয়ার পায়তারা চলছে জেনে তিনি পত্যাগত করেছেন বলে জানান।

তিনি আরো বর্তমান বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে কোন মিল নেই। তাদের একজন বলে একথা অপর জন বলে অন্য কথা। এই অবস্থায় আমি কি করতে পারি। তিনি বলেন, আমি প্রথম মিটিং এ বলেছিলাম রাঙ্গামাটির সকল মঠ মন্দিরকে নিয়ে একটি সভা করে তাদের মতামত নেয়ার জন্য। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক পঞ্চানন ভট্টাচার্য্য আমাকে বলে আমি এটির এখতিয়ার রাখি না। পরবর্তীতে যখন বুঝতে পারে এটা করতে হবে তখন সে বৈঠক ডাকে। বৈঠকে রাঙ্গামাটির অনেক মন্দিরের প্রতিনিধি আসেনি। তারপরও আগামী ১৭ জুনে সম্মেলন সফল করতে আমি ব্যক্তিগত ভাবে যোগাযোগ করে চেয়েছিলাম রাঙ্গামাটিতে একটি সুন্দর কমিটি গঠন করতে। কিন্তু বর্তমান কমিটির সভাপতি অমর কুমার দে ও সাধারণ সম্পাদক পঞ্চনন ভট্টাচার্য্যরে মধ্যে সমন্বয় না থাকায় আমি বাধ্য হয়েছি পদত্যাগ করতে। গতকাল সন্ধ্যায় আমি সভাপতি অমর কুমার দের হাতে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে এসেছি। তাদের দলাদলিতে আমি আমার সম্মান হারাতে বসেছি। তাই পরিবারের সকল সদস্যের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমি পদত্যাগ করতে বাধ্য হই।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব কুশল চৌধুরী বলেন, একটি ব্যক্তির জন্য সম্মেলন কখনোই পিছিয়ে থাকবে না। একজন কুশল না থাকলে পূজা উদ্্যাপন বন্ধ হবে না। আগামী ১৭ জুন সম্মেলন অবশ্যই হবে। তিনি বলেন, অমর কুমার দে চাচ্ছে এক তরফা ভাবে সম্মেলন করার জন্য। আমরা চাচ্ছি সার্বজনিন ভাবে সম্মেলন দিতে। এখানে স্বপন মল্লিক হচ্ছে অমর বাবুর ফটোকপি। অমর বাবু যা বলে তিনি তাই বলেন। তিনি বলেন বিষয়টি নিয়ে আমরা কেন্দ্রীয় ভাবে কথা বলছি। সম্মেলন অবশ্যই হবে।

তিনি বলেন, আমরা চাচ্ছি রিজার্ভ বাজার থেকে বের হয়ে উসাই অথবা রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদে সম্মেলন করতে। এই সম্মেলনে রাঙ্গামাটির প্রবীন রাজনীবিবিদকে রাখতে চাচ্ছি কিন্তু অমর বাবুর তা চাচ্ছে না। তিনি বলেন, আমরা চাচ্ছি একটি সুন্দর ও রাঙ্গামাটির সর্বস্তরের সনাতনী ও মঠ মন্দিরকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে কিন্তু স্বপন কুমার মল্লিক ও প্রাক্তন কমিটির সভাপতি সহ কয়েকজন তা মনে নিতে পারছে না। তিনি বলেন, সম্মেলন হবে নির্দিষ্ট তারিখেই হবে। সকল সনাতনীয়দেরকে নিয়েই হবে।