পর্যটন স্পষ্ট গুলোতে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক সংখক পর্যটক ও মাক্স নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা প্রদান
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
স্বাস্থ্য বিভাগ কর্র্তৃক রাঙ্গামাটি রেড জোন ঘোষণা করায় করোনা সংক্রমণ রোধে রাঙ্গামাটির বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন। রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের মোবাইল টিম কার্যক্রম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। রাত ৮ টার মধ্যে সকল দোকান পাট বন্ধ, পর্যটন স্পষ্ট গুলোতে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক সংখক পর্যটক ও মাক্স নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে রাঙ্গমাটিকে করোনা রেড জোন ঘোষণা করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন মহল। গত (১২জানুয়ারি ২০২২) জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে কেবল মাত্র একজনই ভর্তি আছেন সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে। রাঙ্গামাটি জেলা করোনা রেড জোন ঘোষণা করায় আতংক বেড়েছে অনেকের মধ্যে।
রেড জোনে থাকা রাঙ্গামাটি জেলার করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে করনীয় নির্ধারনে জেলা করোনা প্রতিরোধ বিষয়ক কমিটির উদ্যোগে আজ জরুরী সভা য় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জরুরী সভায় বক্তব্য রাখেন রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মামুন,রাঙ্গামাটি জেলা পুলিশ সুপার মীর মোহাম্মদ মোদদাছছের হোসেন, পৌরসভা মেয়র মোঃ আকবর হোসেন চৌধুরী, জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা প্রমূখ।
গত ‘নভেম্বর মাসে রোগির সংখ্যা ছিল ৮ জন। ডিসেম্বরে ২৭ জন। এবং গতকাল পর্যন্ত রাঙ্গমাটি জেলায় এই সংখ্যা ২৪ জন। এটা শুধু পর্যটকদের আসার কারণে হয়েছে বলবো না। এখানকার অনেক লোক বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে যায়। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে লোকও আসে। তবে সীমান্তবর্তী এলাকা নিয়ে আমাদের বেশি ভীত-সন্ত্রস্ত হওয়ার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না’। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে নিজেদের সক্ষমতা উল্লেখ করে সিভিল সার্জন বলেন, ‘মন্ত্রী পরিষদ থেকে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে ইতোমধ্যে আমরা সার্কুলার করেছি। এবং আমাদের কোভিড ইউনিট প্রস্তুত আছে। সেখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী ও ওষধ পত্রসহ প্রয়োজনীয় লজিস্টিকও আছে’।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, উচ্চঝুঁকি থাকায় ঢাকা ও রাঙ্গামাটি জেলা সংক্রমণের রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া মধ্যম ঝুঁকির তালিকায় ৬ জেলাকে ‘হলুদ জোন’ এবং কম ঝুঁকির ৫৪ জেলাকে সবুজ জোন বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেখানে সংক্রমণের উচ্চঝুঁকি, মধ্যম ঝুঁকি ও কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৪৫ জনের। এরমধ্যে তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৬.৬৭%।
গতকাল বুধবার নিজের কার্যালয়ে সিভিল সার্জন বলেন, ‘রোগি শনাক্তের হার ১০ থেকে ১৯ শতাংশ হলেই সেখানে রেড জোন ঘোষণা করা হচ্ছে। তার ভিত্তি করেই রাঙামাটিকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। গত সপ্তাহে আমাদের রোগি শনাক্ত হয়েছে ১৮ জন। সেই হিসেবে আমি মনে করি যে সংখ্যাটা খুব একটা বেশি নয়। শুধু এখানে আমাদের পরীক্ষা সংখ্যা কম হওয়াতে এই পার্সেন্টিজ বেড়ে গেছে’।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, করোনা রেড জোন ঘোষণা করার সময় এখনো হয়নি। তবে সরকার হয়তো বা ঝুঁকি মনে করেছেন তাই রেড জোন ঘোষণা করেছেন। ইতি মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক ১১বিধি নিষেধ দাপ্তরিক আদেশ পেয়েছি। আজ থেকে জেলা প্রশাশকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা করোনা বিধি নিষেধ জনগণকে সচেতন করতে মাঠে থাকবে। আইন অমান্যকারিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিধি নিষেধ না মানলে প্রয়োজনে জেল জরিমানা করা হবে। রাঙামাটিবাসীকে সরকারের বেঁধে দেয়া ১১ বিধি নিষেধ মেনে চলতে আহবান জানা জেলা প্রশাসক। তিনি আরো বলেন, সবাই মাক্স ব্যবহার করবেন এবং রাত আটটা পর্যন্ত দোকাপাট খোলা রাখার পরামর্শ দেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে বনরুপা কাচাবাজার,রির্জাভ বাজার,তবলছড়ি ও কলেজগেট এলাকায় করোনা সচেতনতায় জনগণের মধ্যে মাক্স বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন।এসময় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং বনরুপা বাজার,তবলছড়ি বাজার,রির্জাভ বাজার ও কলেজগেট ব্যবসায়ি মহল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।