সেনাবাহিনী ও পুলিশকে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
সেনাবাহিনী ও পুলিশকে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজি মুজিবুর রহমান।
বুধবার (৩ অক্টোবর) সকালে রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী পূর্ণিমা চাকমা হত্যার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার ও হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলা শাখার পক্ষ হতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ দাবি জানান।
উক্ত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সদস্য সচিব মোঃ মামুনুর রশীদ মামুনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় মহা সচিব মো আলমগীর কবির, রাঙ্গামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সোলায়মান, সহ সভাপতি নাদিরুজ্জামান, কাজি জালোয়া। বক্তব্য রাখেন মহিলা পরিষদ নেত্রী মোরশেদা আক্তার, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সিঃ সহ-সভাপতি মোঃ হাবিব আজম, তাজুল, শরিফা প্রমুখ।
মানববন্ধনে এসময় বক্তরা বলেন, গত (শুক্রবার) ২৯ অক্টোবর, ২০২১ খ্রিস্টাব্দে রাঙ্গামাটিতে ১৯ বয়স বয়সী পূর্ণিমা চাকমা নামে এক কলেজছাত্রী স্বজাতি কর্তৃক ধর্ষিত হয়ে হত্যাকান্ডের শিকার হয়। বক্তারা বলেন, কলেজ ছাত্রী পূর্ণিমা চাকমা জেলার জুরাছড়ি উপজেলার ৪নং দুমদুম্য ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বগাহালি এলাকার সাধন চাকমার মেয়ে। সে রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
বক্তারা আরো বলেন, পূর্ণিমা চাকমা রাঙ্গামাটি শহরে রাজবাড়ি এলাকায় এক প্রভাবশালী জেএসএস সন্তু গ্রুপের নেতার বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি যে বাসায় ভাড়া থাকেন সেই বাড়ি মালিক জেএসএস সন্তু গ্রুপের নেতা। বাসার মালিক কর্তৃক বারবার যৌন হয়রানি হয়েছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে ঐ বাসার মালিক আত্মগোপেন রয়েছে।
বক্তারা বলেন, পূর্ণিমা চাকমাকে যৌন হয়রানি ও একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। পূর্ণিমা চাকমা ধর্ষণের কথা প্রকাশ করে দিবে এই ভেবে তাকে হত্যা করে তার লাশ ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয় এবং পরবর্তীতে ঘটনার ধামাচাপা দিতে আবার চিকিৎসার জন্য রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালেও নিয়ে যায়। যা থেকে সবাই ভাববে পূর্ণিমা চাকমা আত্মহত্যা করেছে, পরিবারের পক্ষ থেকে এমনই অভিযোগ করা হয়।
এদিকে পূর্ণিমা চাকমার দরিদ্র পরিবারের উপর আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠনের প্রবল চাপের মুখে পরিবারের সদস্যরা মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছে। বাংলাদেশে মানবাধিকার সংগঠনসহ যারা নারী নির্যাতনের বিষয়ে ও পাহাড়ীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার সবাই এখন চুপ, কোন প্রতিবাদ করেনি।
বক্তারা আরো বলেন, মেয়েটি চাকমা সম্প্রদায়ের। তাদের রাখাইন রাণী ইয়ান ইয়ান সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইন্টারন্যাশনাল উইমেন পিএস বিল্ডিং অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার পেয়েছেন। পাহাড়ের যে কোনো নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত সোচ্চার। তবে তিনি সেই সব অভিযোগ নিয়ে সোচ্চার হন যেখানে অভিযুক্ত হিসেবে বাঙালি ও নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে আঙুল তোলা হয়। কিন্তু তার বাড়ির পাশে, তারই প্রজা পূর্ণিমা চাকমা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদ জানাতে চাকমা রাজার রাখাইন বউ ইয়ান ইয়ানকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। খুঁজে পাওয়া যায়নি বাসন্তি চাকমা, বাঞ্ছিতা দেওয়ান, নিরুপা দেওয়ান, সুস্মিতা চাকমা, ডলি প্রু চৌধুরীর মতো মানবাধিকার বড় বড় নেত্রীদের। ফলে বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদছে আজ।
বক্তারা জোর দাবী জানিয়ে বলেন, পূর্ণিমা চাকমার লাশের সঠিক ময়নাতদন্ত করে, সত্য ঘটনা উন্মোচন করার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি। সে সাথে বাসার মালিক ধর্ষক ও হত্যাকারী জড়িত জেএসএস সন্তু সন্ত্রাসীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।