॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে সামনে রেখে ফের অশান্ত হয়ে উঠছে পাহাড়ের জনপথ। নির্বাচন সামনে রেখে পাহাড়ে জুড়ে মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। বিশেষ করে পাহাড়ি অধ্যষিত এলাকা গুলোতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা ভয়ে ও আতংকে দিন কাটছে। সাথে পাহাড়ি এলাকার সাধারণ মানুষও নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের মধ্যে দিনতিপাত করছে। অনেকে মনে করেন কাপ্তাইয়ের খুন দিয়ে সন্ত্রাসীরা নির্বাচনী সহিংসতা শুরু করেছেন। এই ঢড় ভয়ে দ্বিধাদ্বন্ডে আছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতিক চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান প্রার্থী কাপ্তাইয়ের খুনের ঘটনার পরে নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সংশয় কাজ করছে তাদের মনের মধ্যে।
গত শনিবার ঠিক রাত ১২টার পর কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা থানার চিৎমরম ইউনিয়নের আগাপাড়া এলাকায় ঘরে ঢুকে সামনাসামনি অতর্কিত গুলি করে তাকে হত্যা করার ঘটনায় কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। নির্বাচন স্থগিত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাপ্তাই উপজেলা নির্বাচন অফিসার তানিয়া আক্তার। তিনি আরো জানান পরবর্তীতে তফসিল ঘোষনার মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার আহবান জানান। পার্বত্য অঞ্চলে আঞ্চলিক দলগুলো বেছে বেছে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। তারা নেওথোয়াই মারমাকে হত্যা করেনি, হত্যা করেছে দেশের গণতন্ত্রকে। নেওথোয়াই মারমার অপরাধ ছিল গণতান্ত্রিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে প্রার্থী হয়েছেন বলে। এটাই তার বড় অপরাধ। এর আগে জুরাছড়ির অরবিন্দ চাকমা, বিলাইছড়ির সুরেশ তঞ্চঙ্গ্যাসহ আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
তিনি আরো বলেন,বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশ ও জাতির গর্ব। আগে পার্বত্য অঞ্চলে অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। সেনাবাহিনীর তৎপরতার কারণে কিছুদিন পার্বত্য অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞের মতো সন্ত্রাসী কার্যক্রম কিছুটা বন্ধ ছিল। এখন নতুন করে ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে আবারও হত্যাযজ্ঞে নেমেছে আঞ্চলিক দলের সন্ত্রাসীরা। শুরুতেই হত্যা করল কাপ্তাইয়ের চিৎমরম ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রার্থী নেওথোয়াই মারমাকে। পার্বত্য অঞ্চলে অবৈধ অস্ত্র ও অস্ত্রধারীদের দমন করতে নতুন করে তৎপরতা বাড়াতে হবে। অপারেশন উত্তরণের মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের শান্তি ফিরিয়ে আনতে সেনাবাহিনীর তৎপরতা আরও অধিক জোরদার করার আহবান জানান।
রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন মঙ্গলবার মুঠোফোনে জানান, কাপ্তাইয়ে ইউপি চেয়ারম্যান (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থীকে ঘওে ঢুকে গুলি কওে হত্যা করা হয়েছে এটা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এধরনের ঘটনার পুর্ণাবৃত্তি আমরা কেউ কামনা করিনা। যারা এঘটনা ঘটিয়েছে তারা দেশ ও সমাজের শক্র। সন্ত্রাসী যে কেউ হউক না কেন সে সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসীদের কোন জাত নাই। আগামী ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দও ভাবে সম্পন্ন করতে ইতি মধ্যে জেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মিলে মিটিং করা হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দও হবে। এতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন রয়েছে। এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, এহত্যাকান্ড ঘটনায় নিহতের পরিবার এখনো মামলা করতে আসেনি। তবে শুনেছি তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এব্যাপারে এখনো কেউকে গ্রেফতার করা হয়নি। বর্তমানে ওই এলাকার পরিবেশ পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।