॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
ইপি নির্বাচনকে ঘিরে আবারো রাঙ্গামাটিতে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী হত্যার ধ্বংসযজ্ঞে নেমেছে আঞ্চলিক রাজনৈদিক দল গুলো। এবার নতুন করে কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীকে হত্যা করেছে। নিহত নে থোয়াই মারমা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি। তিনি আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন প্রার্থী হয়েছেন। মনোনয়ন পত্র জমাদেয়ার ১ দিন পর তাকে নিজ বাড়ীতে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাপ্তাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইকবাল বাহার চৌধুরী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় গতকাল রাত সাড়ে ১১ টার দিকে রাঙ্গামাটি কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম এলাকায় নে থোয়াই মারমার বাড়ীতে ১০/১২ জনের একটি সন্ত্রাসী দল হামলা চালায়। ঘরের দরজা ভেঙ্গে নে থোয়াই মারমাকে বাড়ীতে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা বাড়ীর লোকজনকে শাষিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে ঘটনাটি স্থানীয়দের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকা জুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মূছা মাতব্বর ও কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য অংসুছাইন চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য অংসুছাইন চৌধুরী বলেন, নিহত নে থোয়াই মারমার ছেলে গতকাল রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আমাকে ফোন করে তার বাবাকে সবুজ জামা পরিহিত ১০/১২ জনের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করে। তিনি বলেন বাবা এখনো জীবিত আছে। তার ২০ মিনিট পর আবারো ফোন করে বলে বাবা জীবিত নেই। পরবর্তীতে আমি বিষয়টি পুলিশ, বিজিবি, গোয়েন্দা সংস্থার সকলকে জানায়। পর রাতে পুলিশ ও বিবিজি নিয়ে ঘটনাস্থলে রওনা হই আমরা সকলেই। রাতেই আমরা নে থোয়াই মারমার বাড়ীতে পৌছালে একটি হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। তার ছেলে জানায় জলপাই কালারের পোশাক পরিহিত। সকলের হাতে ভারী ভারী অস্ত্র রয়েছে। তারা প্রথমে আমাদের বাড়ীরে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয়। আমার বাবা তখন ভিতরের ঘরের মাচার উপর লুকিয়ে থাকে। তারা দরজা ভেঙ্গে বাড়ীতে ঢুকে। বাড়ীতে ঢুকে বাবাকে খুঁজে বের করে ঘরের ভেতরেই গুলি করে হত্যা করে। বাবাকে তিনটি গুলে করে সন্ত্রাসীরা। তারা আমাদেরকে হুমকী দিয়ে যায়।
অংসুছাই চৌধুরী বলেন, আমরা লাশ নিয়ে রাতেই চন্দ্রঘোনা থানায় নিয়ে এসেছি। এর পর লাশ নিয়ে রাঙ্গামাটি হাসপাতালে পোষ্টমটেমের জন্য যাবে। পরবর্তীতে লাশ আমরা সামাজিক ভাবে দাহ ক্রিয়া সম্পন্ন করবো। এই নেতাকে শেষ বিদায় জানিয়ে পরবর্তীতে আমরা জেলার নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচী গ্রহণ করবো।
চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, রাতেই লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। সকল আইনী কার্যক্রম শেষে ময়না তদন্তের জন্য রাঙ্গামাটি পাঠানো হবে।
এদিকে, রাতে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মূছা মাতব্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তার ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে ষ্ট্যাটাসের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি তার টাইম লাইনে বলেন, আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র সকল চেয়ারম্যান প্রার্থীগণকে সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।
কাপ্তাই আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বলেন, রাঙ্গামাটির আঞ্চলিক সংগঠন গুলোর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাঙ্গামাটির বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত হামলা চালায়। ইতিমধ্যে চিৎমরম এলাকায় প্রতিনিয়ত তাদের আধিপত্য বিস্তার চলছে। সাধারণ মানুষের উপর হামলা চালিয়ে তাদের শক্তির প্রদর্শন করে। এছাড়া নির্বাচন আসলেই আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীর উপর চড়াও হচ্ছে সন্ত্রাসীরা। প্রতিবার নির্বাচন আসলেই আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের হত্যা করে একটি আতংকিত পরিস্থিতি সৃস্টি করে। নেতাকর্মীরা এই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান।